Ananya Literary Award : গবেষক রঞ্জনা বিশ্বাস পেয়েছেন এবারের ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার’

ছবি সংগৃহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পরাধীনতা থেকে কোন দেশ যখন স্বাধীনতা অর্জন করে, তার অংশিদার দেশটির যেকোন সম্প্রদায়ের লোকেরই অংশিদারিত্ব থাকতে পারে। আরও সহজভাবে বললে, সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মিলিত লড়াইয়ে অর্জিত হয় স্বাধীণতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষ আত্মোৎসর্গ করেছেন। এই লড়াই নৃগোষ্ঠী থেকে শুরু করে জাতিধর্ম সকলের সম্প্রদায়ের মানুষ সব কিছু ভুলে গিয়ে প্রথম তাদের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে যুক্ত হয়েছেন। আর তার মধ্যই অর্জিত লালসবুজে খচিত পতাকা। দেশটির নাম বাংলাদেশ। যার স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বেদে সম্প্রদায়ও।
এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৪টি। বেদে জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশের লোক-ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এছাড়া গবেষণার অন্যতম প্রধান বিষয় মুক্তিযুদ্ধ ও লোকসাহিত্য। রঞ্জনা বিশ্বাসের গবেষণায় মুক্তিযুদ্ধে বেদে সম্প্রদায়ের অবদান ও আত্মত্যাগের কথা ওঠে এসেছে। বাংলা ঐতিহ্যবাহী পালকিবাহীদের জীবন ও অনালোচিত সেই ইতিহাসও তুলে ধরেন রঞ্জনা। লোকগীতি, লোকসঙ্গীতের কথাগুলোও ওঠে এসেছে তার গবেষণায়।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক ইত্তেফাক ও অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।
আলোচক কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক আকিমুন রহমান বলেন, রঞ্জনা শুধু গবেষক না, সৃজনশীল লেখকও। তিনি একাধারে কবি ও ঔপন্যাসিক। তার কবিতা ও উপন্যাস পড়ার সময় আমি অভিভূত হয়ে যাই। তিনি এ ক্ষেত্রে আলাদা করে পুরস্কৃত হওয়ার যোগ্য।
তাসমিমা হোসেন বলেন, রঞ্জনা বিশ্বাস নতুন প্রজন্মের লেখক। ওর দেখার দৃষ্টিও অনন্য। তিনি বাংলাদেশের অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটিয়ে দিচ্ছেন। একবিংশ শতকে এসে মানুষ হিসেবে সমাজের এই শ্রেণিভেদ ভেঙে দিতে চাই আমরা। রঞ্জনা লোকধর্ম ও লোকায়াত জীবন নিয়ে কাজ করে সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন আমাদের কাছে। অনন্যা কখনো বয়স দিয়ে মানুষের যোগ্যতা বিচার করে না। রঞ্জনাকে তাই পুরস্কৃত করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছে অনন্যা।
বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) প্রথম ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান করছে। বাংলাদেশের সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিবছর একজন নারী সাহিত্যিককে পুরস্কার প্রদান করছে। এ পর্যন্ত ২৬জন নারী সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পেয়েছেন অনন্যা পুরস্কার।