Environment : বাড়ছে সর্দি কাশির প্রকোপ: দায়ী কি মানুষ নিজেই?

ছবি সংগ্রহ
সৈকত তাঁত
আচ্ছা, একটা বিষয় ভেবে দেখেছেন? ঠিক কোন ভাইরাসের কবলে পড়ে শহরের প্রায় সব মানুষ জ্বর, সর্দিতে আক্রান্ত? মানে এই সময়ে টুকটাক ফ্লু, সর্দি কাশি লেগেই থাকে, কিন্তু ২০২২ এর জানুয়ারিটা আমার একটু বেশি-ই চোখে লাগছে। আপনি বলবেন সর্বত্র আক্রমণ চলছে, অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমি একটু অন্য কথা বলতে চাই।
নিজের কথাই বলি। আমি সারা বছর জ্বর, সর্দিতে ভুগি, রোজ সকাল নিয়ম করে ২০-৩০ বার হাঁচি। তাই এখনের বিষয়টা আমার কাছে নতুন নয়। গত সপ্তাহে পাহাড়ে গেছিলাম। দু’দিন সিকিমে ছিলাম, দুদিন কালিম্পং-এ। ঠান্ডা বেশ ভালোই ছিল। জুলুকে তো প্রচুর তুষারপাত পেয়েছি, ছবি দেখেছেন। না আমার হাঁচি হয়েছে, না হয়েছে কাশি, না আমি সর্দিতে ভুগেছি।
যাদের সঙ্গে গেছিলাম তাদেরও এক-ই। বাড়ি ফিরলাম, আবার শুরু হয়ে গেলো হাঁচি, নাক টানা। আমি নিশ্চিত যারা যারা নিয়মিত পাহাড় যান, তারা মানবেন যে পাহাড়ে না আছে অতিমারি, না আছে জ্বর, সর্দি কাশি। তার কারণ কি?
খুব সোজা হিসেব। এই সবার স্ট্যাটাস যে দেখছি, কলকাতা আক্রান্ত, গোটা শহরকে রাম খেতে হবে, এটা প্রত্যেক বছর দেখতে পেতে চলেছেন। শীতকালে বায়ুর গতিবেগ শিথিল থাকে, দূষিত হাওয়া সহজে যায়না, বায়ু দূষণ তীব্র হারে বেড়ে যায়, এবং আসল ভাইরাস সরপৎড়হ নয়, আমাদের শহর গুলির বায়ুদূষণ, যেটা শীতে আপনি নিজের চোখে দেখতে পান।
জানি, নতুন কিছু লিখলাম না, আপনি সবই জানেন, কিন্তু জেনে আপনি খবরে সরপৎড়হ কত কেস বাড়ালো সেই নিয়ে চর্চা করেন কিন্তু আপনার সরকার, আপনার বহুজাতিক সংস্থা গুলি পরিবেশের হত্যা যখন করে তখন আপনি বিশেষ গুরুত্ব দেন না। এই ভাইরাস কিন্তু এমনি এমনি আসেনি, আর কোথাও যাচ্ছেনা।
আসল রোগটা কি সেটা যদি এখনো না বোঝেন, তাহলে প্রত্যেক শীতের জন্যে স্ট্যাটাস তৈরি করে রাখুন, আর ডাক্তারের কাছে অগ্রিম সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে রাখুন। আমাদের ধ্বংস কোনো ভাইরাস না, আমাদের দ্বারা হওয়া দূষণ ই করবে। সরকার গাছ কাটবে, পুকুর ভরাট করবে, আপনি চুপ থাকবেন আর তারপর কালোবাজারিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনবেন।
লেখক : সৈকত তাঁত, পরিবেশ কর্মী