POET KAZI NAZRUL : ‘চেতনায় নজরুল’ শতবর্ষে বিদ্রোহী (১৯২২-২০২২)

POET KAZI NAZRUL :  ‘চেতনায় নজরুল’ শতবর্ষে বিদ্রোহী (১৯২২-২০২২)

জাতীয় কবির ১২৩তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা 

১৯২২ সালের ১২ আগস্ট বিদ্রোহী কবিতাটি ‘ধূমকেতু পত্রিকা’ প্রকাশিত হলে ভারতের সাহিত্য সমাজে খ্যাতিলাভ করে। এই কবিতায় নজরুল নিজেকে বর্ণনা করেন

“আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,

আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ জ্বালা, চির লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের

আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,

চিত চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর!

আমি গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল করে দেখা অনুখন,

আমি চপল মেয়ের ভালবাসা তার কাকন চুড়ির কন-কন।

...

মহা-বিদ্রোহী রণক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত।

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,

অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-

বিদ্রোহী রণক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত।

..........................

আমি চির বিদ্রোহী বীর 

বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির!”

১৯২০-এর দশকে অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলন এক সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এর পরপর স্বরাজ গঠনে যে সশস্ত্র বিপ্লববাদের আবির্ভাব ঘটে তাতে ধূমকেতু পত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল। এই পত্রিকাকে আশীর্বাদ করে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন,

“কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু।

আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেত”

মানুষের চেতনা জাগিয়েই সাহিত্যের জগতে পা রাখেন কবি নজরুল। সাহিত্যকর্ম ও গানের নানা শাখায় তার পদচারণা ছিলো। চির যৌবনের কবি, প্রেম এবং দ্রোহ যার লেখনীতে মিলেছে এক সুরে, সেই ভালোবাসা কবি, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী জমকালো আয়োজনে জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। 

কবির স্মৃতিধন্য সাংস্কৃতিক শহর কুমিল্লার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার মাঠে সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহায়তায় জেলা প্রশাসন তিনব্যাপী বর্ণঢ্য আয়োজনে  সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। 
আয়োজনের উদ্বোধনী দিনে ‘শত কণ্ঠে বিদ্রোহী কবিতা’ পাঠ করা হবে। 

অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ কবি নজরুল। তার লেখা সাহিত্য, গান জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার সৃষ্টি কবিতা ও গান যুগে যুগে মানুষকে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখাচ্ছে।  বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণার উৎস ছিল নজরুলের গান ও কবিতা। 


জাতীয় কবির ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।