Rathyatra : রথযাত্রায় ঘিরে ঢাকায় সম্প্রতির ‘মানবমিছিল’

রথযাত্রা
এ. এইচ. ঋদ্ধিমান, ঢাকা
দুই বছর পর উৎসব মুখর পরিবেশে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহাসিক রথযাত্রা। ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা স্বামীবাগ লোকারণ্য। বলা যায় মানবমিছিল। গত কয়েকদিন যাবত রথযাত্রা আয়োজন ঘিরে ইসকন মন্দিরে ব্রহ্মচারীরা ব্যস্ততায় কাটান। দুই বছর পর রথযাত্রায় বিপুল সংখ্যক ভক্তের সমাগম ঘটে। সনাতনধর্মের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে। শুক্রবার সরকারী ছুটির দিন হওয়া মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে রথ।
ঢাকার ইসকন মন্দিরে রথযাত্রা উৎসব উদ্বোধন করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসবে গিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী অন্য অতিথি এবং পূণ্যার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান
স্বামীবাগের ইসকন মন্দির প্রাঙ্গণে এদিন সকাল থেকে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ শেষে তিনটি সুবিশাল রথে জগন্নাথ দেব, শুভদ্র ও বলরামের প্রতিকৃতিসহ রথ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত সব বয়সের শত শত নারী-পুরুষ অংশ নেন। ব্যস্ততম পুরাতন ঢাকার স্বামীবাগ তখন যানবাহন শূন্য। আগে পিছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা বলয়। পথের দু’পাশে রশি দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনি।
তার মধ্যে দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে দীর্ঘ মানবমিছিল। উচ্চ শব্দে বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে হরে কৃষ্ণ--হরে কৃষ্ণ যপ করতে করতে এগিয়ে যায় ভক্তদের শোভা যাত্রা। রাজপথে লুটিয়ে পড়েন ভক্তের দল। সর্বধর্মের হাজারো মানুষ রাজপথের দু’পাশে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। পূরির পর ঢাকায় সর্ববৃহৎ রথযাত্রার ইতিহাস রয়েছে।
সকাল থেকেই দলে দলে নানা বয়সের মানুষের সমাগম হতে থাকে ইসকন মন্দিরে। দু’বছর পর রাজপথে রথের চাকা গড়ায়। এর আগে ইসকন মন্দিরে হোমযজ্ঞ ঘিরে তিলধারণেনর ঠাঁই ছিলো না। অলিগতিতে ভক্তের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরাতন ঢাকা। যা প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির পক্ষে ডালা সাজিয়ে রথকে বরণ করে নেওয়া হয়। আগামী ৮ জুলাই ফিরতি রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী প্রভু
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) সাধারন সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী প্রভু বলেন, বিশ্ব শান্তি কামনায় জগনাথ দেবের ১২৫তম আবির্ভাব দিবসে ১৪৫টি হোম যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। আমরা দুই বছর প্রাকাশ্য রথযাত্রা কেরতে পারিনি। করোনা অতিমারি রথের চাকা থামিয়ে দেয়। এবারে প্রভুর দয়ায় রথযাত্রা আয়োজন করতে পেরেছি। দূরদুরান্ত থেকে বহু ভক্তরো এসে যোগদিয়েছেন এই বিশাল আয়োজনে।
চিত্রা দেবি
মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে রথযাত্রার আয়োজনে যোগ দিতে এসেছিলেন চিত্রা দেবি। টানা দুই বছর পর স্বাভাবিক রথযাত্রার মহাধুমধাম আয়োজন প্রত্যক্ষ করে কেবল তাকিয়ে ছিলেন। বললেন, টানা দুই বছর পর স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসাটাই অন্যরকম মনে হচ্ছে। নিজেদের খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।