Victory rally : ঢাকার আকাশে বাতালে বিজয় ধ্বনি

নিজস্ব ছবি
উদয়ন চৌধুরী
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু ডাকে লাখো জনতা হাজির হয়েছিলেন মাথায় গামছা বেধে এবং হাতে লগি-বৈঠা নিয়ে। এবারের ৫০তম বিজয় র্যালীতে লাখো মানুষের উপস্থিতি ছিলো লাসবুজের সার্জি পড়ে এবং হাতে স্মার্ট ফোন নিয়ে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ বছরব্যাপী আয়োজনের পরদিন অর্থাৎ ১৮ই ডিসেম্বর শাসক দল আওয়ামী লীগ বিজয় র্যালীর আয়োজন করে। র্যালীতে যোগ দিতে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বর্ণাঢ্য ট্রাক মিছিলে রাজধানী মুখো ঢল নামে লাখো মানুষের। সবার গন্তব্য সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান।
এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই ৭১’র ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। সেদিনের ভাষণে জাতির জনক বলেছিলেন, এবারের ‘সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’। সেদিনের মাত্র ১৮ দিনের মাথায় কুখ্যাত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিলো। রাতের অন্ধ্যকারে হাজারো মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিলো। আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দিয়েছিলো হাজারো স্থাপনা। ধ্বংস করে দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এরপর কাতারে কাতারে মানুষ ভারতের মাটিতে আশ্রয় নিয়েছিলো। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ। অর্জিত হয় রালসবুজে খচিত পতাকা। এই অর্জনের পেছনে ভারতের যে অবদান তা অনস্বীকার্য। ভারতের সেনাবাহিনীর রক্তে ভিজেছে বাঙলার জনপদ।
মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত লালসবুজের পতাকা নিয়েই লাখো মানুষের উপস্থিত লক্ষ্য করা গিয়েছে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের বিজয় মিছিলে। সেদিন পিছিয়ে পড়া বাঙলার নারী সমাজ আজ বহুদূর অগ্রসর হয়েছেন। আকাশে বিমান চালনা থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে বাঙলার নারীদের জয়জয়কার। মিছিলে অংশ নেওয়া অনেকেই জানালেন, বঙ্গবন্ধু ডাকে স্বাধীন বাংলাদেশে আজ তারা ৫০তম বিজয় মিছিলে অংশ নিতে পেরে গর্বিত।
বিজয় র্যালীতে অংশ নেওয়া ঢাকার খিলক্ষেত আওয়ামী যুব লীগের সহসভাপতি কানিজ ফাতেমা বলেন, তারা শেখ হাসিনাকেই বার বার দেশ পরিচালনায় দেখতে চান। কারণ, উন্মত্ত পদ্মায় সেতু, প্রথম বারের মতো পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু জোড়া টানেল। কানেক্টিভিটি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সাবমেরিন সবই এসেছে শেখ হাসিনার হাত ধরে। সোহেলি বিলকিস সোমাও কানিজ ফাতেমার কথায় গলা মিলিয়ে জানালেন, বাংলাদেশের শেখ হাসিনার বিকল্প কেউ নেই। তার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ। তাই এেেদশের মানুষ আগামীতেও শেখ হাসিনাকেই চায়।
বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নতি লাভ করেছে। রেকর্ড রেমিট্যান্স আসছে। রপ্তানিতেও মাইল ফলক অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
ভারত-বাংলাদেশ কানেক্টিভিটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এক নতুন মাইল। বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৫টি রেলসংযোগ চালু রয়েছে। উত্তরপূর্ব বারতের সঙ্গে আরও ৩টি রেলসংযোগ আগামী বছরের মধ্যে হবার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বর্তমানে অনন্য উচ্চতায় রয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্ত, মুজিববর্ষ এবং ভারতের সঙ্গে কূটনেতিক সম্পর্কের পালনের বর্ণাঢ্য আয়োজনে যোগ দিতে তিনদিনের সফরে বাংলাদেশ আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনদিনের সফর শেষে শুক্রবার দিল্লীর উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন রামনাথ গোবিন্দ।