evening in history : বিশ্বে বিরল অনন্য  ‘শেখ হাসিনা’,  ইতিহাসের বিরল সন্ধ্যান  

evening in history : বিশ্বে বিরল অনন্য  ‘শেখ হাসিনা’,  ইতিহাসের বিরল সন্ধ্যান  

মীর মোস্তাক আহমেদ রবির লেখা বইয়ের প্রচ্ছদ 

বাংলাদেশে নজিরবিহীন গণহত্যা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার উন্নয়নের  ইতিহাস ইত্যাদি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার মাধ্যমটি খুবই নাজুক। কারণ, বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে বহু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ইংরেজি ভাষায় অপ্রতুল। যেকারণে বিশ্ববাসী বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত নন। বাংলাদেশের  গণনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে বিশ্বের বহু মানুষের জানার আগ্রহ রয়েছে। মীর মোস্তাক আহমেদ রবি’র লেখা ‘বিশ্বে অনন্য বিরল শেখ হাসিনা’ বইটি এক মলাটে ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় হওয়ায় বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা তথা তার হাত ধরে অভূতপূর্ব উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে জনাব রবি সফল।  

অনিরুদ্ধ 

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান দু’টি দেশের জন্ম হয়। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির প্রবক্তা এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের বিরোধিতা করেছিলেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া, সিন্ধু, পশ্চিম পাঞ্জাব ও পূর্ববাংলা তথা বর্তমান বাংলাদেশ এই রাজ্যগুলো নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান। ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসন অবসানের প্রাক্কালে বিশ শতকের চল্লিশের দশকে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দ্বিজাতিতত্ত্বের  ধারণাটির উন্মেষ ঘটান। 

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তারা নজিরবিহীন গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালায়। টানা ‘নয় মাস’ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান পরাজিত হয়। এটি হচ্ছে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। 

তার সঙ্গে সাক্ষাত সূচি অনুযায়ী পৌছুলাম তার সংসদ সদস্য বাসস্থানে। আগেও দু’একবার তার বক্তব্য শুনেছি। তবে সেটা দীর্ঘ নয়, সংক্ষিপ্ত। কে একজন আমাকে ওনার সঙ্গে সাক্ষাত করতে বলেছিলেন অনেক আগেই। কিন্তু যাব যাচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন। বাউন্ডুলের জীবনে যা হয়। এবারে লোভ সামলানোটা কঠিন। কারণ, তার বই লেখার বিষয় বস্তু আমাকে মন্ত্রমুগ্ধের টেনে নিয়ে গেছে। 

মীর মোস্তাক আহমেদ রবি 

বিশেষ করে যে বইটি তিনি লিখেছেন, তা ইংরেজি এবং বাংলা ভাষায়। যেটি আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস নিয়ে বহু বই লেখা হলেও তা  বিশ্ববাসীর কাছে ইতিহাস তুলে ধরার জন্য অপ্রতুল। তবে এবারের বই যেহেতু একই মলাটে ইংরেজি-বাংলায়, সেহেতু এটি বিশ্বের নানা ভাষাভাষি মানুষ পড়তে পারবে। জানতে পারবে বাংলার ইতিহাস। লেখকের নাম মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। 

বাংলাদেশের জাতিয় সংসদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ-কমাণ্ডো মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ‘বিশ্বে বিরল অনন্য ‘শেখ হাসিনা’ বইটি লিখেছেন, সেটি ‘ইতিহাসের বিরল সন্ধ্যান’। দীর্ঘ গবেষণার পর  লেখক বইটি সম্পন্ন করেছেন। এটি চলতি মাসেই বাজারে আসছে। একই সঙ্গে বিশ্বের নানা দেশেও এিেট পাওয়া যাবে।  

পাকিস্তান জন্মটাই একটা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হয় আমাদের কাছে। কারণ, আড়াই হাজার কিলোমিটার ব্যবধানে দু’টি দেশ। একটি অংশের মানুষ বর্বর চরিত্রের। লেবাসধারী এসব মানুষ সমাজে অনিরাপদ। তৎকালীন পূর্ববঙ্গের মানুষদের ওপর যার পর নাই অবহেলা-অত্যাচার, শোষণ-নিপীড়ণ চালানো হচ্ছিল। অশিক্ষা, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর একমাত্র ভরসা ছিল মাটি। মাটির বুক চিরে উৎপাদিন ফসলই তাদের বেচে থাকার সম্ভব।  

মানব সেবায় মীর মোস্তাক আহমেদ রবি 

পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য অবির্ভূত হয় এক মানবদেবতার। যিনি বলেছেন, আমি ক্ষমতা চাই না। বাংলার মানুষের অধিকার চাই। এই গণনায়কের নাম শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়ে সাত কোটি মানুষ বন্দুকের নলের সামনে দাড়িয়েছে, যা কীনা দুনিয়ায় বিরল ঘটনা। কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ট্রোর উক্তি ‘আমি হিমালয় দেখিনি, শেখ মুজিবকে দেখেছি’। এই অহংকারের পতন ঘটনানো মানুষগুলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বাংলার অবিসংবাদীত নেতা বঙ্গবন্ধু সকল স্মৃতি চিহ্ন মুছে দিতে তৎপর হয়ে ওঠে। 

আমরা কয়েকজন মিলে শুনছিলাম রবির বলে যাওয়া। তার দরাজ কণ্ঠে কখন বিদ্রোহের আওয়াজ আবার কখন নিচু করে হৃদয়ে রক্তক্ষরণের কথা বলে যান। কখন অনমনা হয়ে ওঠেন, আবার কখনও সোজা হয়ে বসে ফের শুরু করেন। এযেন ইতিহাসের লম্বা পদাবলী। 

শোষণ-শাসনের দীর্ঘ ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত তিনি। স্মৃতির গলিপথ বেয়ে অনেক পথ অতিক্রম করে আসাম এই মানুষটি আর সময় অপচয় করতে চান না। শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা বইটির পর তার আরও একটি ইতিহাস সমৃদ্ধ বই আসার কথা রয়েছে, যা সম্ভব আগামী বই মেলাতেই মিলবে। 

উন্নয়নে রবি

মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ‘নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সনদ’,।   ৬ দফা না হলে ‘৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আইয়ুব খানের বিদায় ঘণ্টা বাজতো না। গণ-অভ্যুত্থানের  পথ বেয়ে  সত্তরের নির্বাচন এবং  পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ। ফিরে তাকালেন  মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।

মীর মোস্তাক আহমেদ রবি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। প্রশিক্ষিত নৌ - কমান্ডো। সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে পরপর  দুইবার নির্বাচিত। জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদের বিশেষ ভাললাগা রয়েছে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি। 

সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পরিবারের সন্তান মীর মোস্তাক আহমেদ রবির জন্ম ১৯৫৪ সালের ২১ জানুয়ারি। মা মেহেরুন নেসা।  বাবা আলহাজ্ব মীর এশরাক আলী ইসু মিয়া ও ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।  দাদা মরহুম পন্ডিত মীর ওয়াজেদ আলী। মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ছাত্র জীবন থেকেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। '৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানের সময় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। 

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের তিনি ছিলেন প্রথম নির্বাচিত ভিপি রবি  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় রাজনীতির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত ছিলেন। কর্মজীবনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আওতাধীন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক, সৌদি আরব রয়েল কমিশনের সহকারী ব্যবস্থাপক, পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁও এর নিরাপত্তা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  

ভাষাবীরদের সম্মান জানান রবি 

এছাড়াও তিনি মুক্তিযোদ্ধা নেভাল কমান্ডো এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান , মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। রাজধনীতি তার পারিবারিক অহংকার। অসহায় মানুষের পাশের দাঁড়ানোর শিক্ষা পেয়েছেন বাবা-মায়ের কাছ থেকে। মুক্তিযুদ্ধকালীন গোটা পরিবার ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। বাবা, ভাই এবং নিজে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বাবা  মীর এশরাক আলী ইসু মিয়া ‘থানার অস্ত্র কেড়ে নিয়ে’ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন, ‘মানবদেবতা’। তিনি ছিলেন পিছিয়ে পরা বাঙালির ‘দীর্ঘশ্বাস’। পূর্ববঙ্গ কুপি-হারিকেনের দেশ। এখানে শষ্য থেকে শুরু উৎপাদন হতো কলকাখানায়। কিন্তু ভোগের অধিকার তেমন ছিল না। একটি দেশের নাগরিকের এই হাল ফেরাতেই যেন জন্ম নিয়েছিলেন শেখ মুজিব। অবশেষ তার ধরেই লালসবুজে খচিত পতাকা উড়ল বিশ্ব দরবারে। 

বিশ্বে বিরল অনন্য ‘শেখ হাসিনা’ বই লেখার বিষয়ে মোস্তাক আহমেদ বলেন, হিমালয়সম বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনার দুরদর্শিতায় বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্ত্তি অনন্য উচ্চাতায় পৌছুছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল, পদ্মাসেতু নির্মাণ, বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্র বন্দর, বে-টার্মিনাল, লাঙ্গল-জোয়ালের দেশের মহাকাশ থেকে সমুদ্রের তলা জয়, ইত্যাদি এসেছে শেখ হাসিনার হাত ধরে। যে কারণে উন্নয়নের মাইল ফলক স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ।